দলিল রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে জমি বা সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করার একটি আইনগত প্রক্রিয়া। এটি সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে যে কোনো ধরনের ঝামেলা এড়াতে সাহায্য করে। দলিল রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ:
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিচের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে:
- বিক্রেতার কাছ থেকে জমির মালিকানা সম্পর্কিত কাগজপত্র (যেমন: বায়া দলিল, খতিয়ান, ভূমি উন্নয়ন করের রশিদ ইত্যাদি)।
- জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্মসনদ ইত্যাদি।
- মৌজা ম্যাপ এবং টিআইএন সার্টিফিকেট।
দলিল প্রস্তুতকরণ:
- কাগজপত্র যাচাই করার পর, একজন সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী বা দলিল লেখকের মাধ্যমে দলিল প্রস্তুত করতে হবে।
- জমির ম্যাপ অনুযায়ী সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
যাচাইকরণ:
- প্রস্তুত দলিলটি ভালোভাবে পড়ুন এবং নিশ্চিত করুন যে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখিত আছে, বিশেষ করে জমির পরিমাণ, খতিয়ান নম্বর ও দাগ নম্বর।
দলিল সম্পাদন:
- দাতা/বিক্রেতা দলিলে প্রতি পৃষ্ঠায় নাম ও স্বাক্ষর করবেন।
- সম্পত্তি হস্তান্তর দলিলে ক্রেতার ছবি ও আঙ্গুলের টিপ দিতে হবে।
সাব–রেজিস্ট্রারের কাছে দাখিল:
- সম্পাদনের পর, মূল দলিল, এল,টি নোটিশ (যদি প্রযোজ্য) ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে দাখিল করতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম:
- দলিল যাচাই করার পর সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক দাখিল করা হবে।
- রেজিস্ট্রেশন ফি, কর ও শুল্ক পরিশোধের মূল পে-অর্ডার দাখিল করতে হবে।
দলিলের রেজিস্ট্রেশন:
- সাব-রেজিস্ট্রার দলিলটি রেজিস্ট্রেশন করবে এবং রেজিস্ট্রেশন শেষ হলে ‘সূচিবহি’ তৈরি হবে।
মূল দলিল ফেরত প্রদান:
- রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হলে, ‘৫২ ধারার রশিদ’ জমা দিয়ে মূল দলিল ফেরত নিতে হবে।
জরিমানা:
- এক মাসের মধ্যে মূল দলিল ফেরত না নিলে প্রতি মাসে ৫ টাকা জরিমানা হতে পারে, তবে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত।
দলিল সংরক্ষণ:
- দলিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষে প্রাপ্ত মূল দলিল সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, কেননা তা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে।
জমির রেজিস্ট্রেশন নিয়মাবলী
কোন কোন দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হয়:
- বিক্রয় দলিল, দানপত্র, বন্ধককৃত জমির দলিল, ও উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি বাটোয়ারা সম্পর্কিত দলিল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- জমির বিবরণ, দাতাগ্রহীতার পিতা-মাতার নাম ও ঠিকানা, ২৫ বছরের মালিকানার ইতিহাস, জমির সীমানা ইত্যাদি।
রেজিস্ট্রেশন ফি:
- রেজিস্ট্রেশন ফি: দলিলে উল্লেখিত মূল্যের ১%।
- স্ট্যাম্প শুল্ক: ১.৫%।
- স্থানীয় সরকার কর: ৩% (সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ২%)।
- উৎসে কর: ২% থেকে ৬% (ভৌগলিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে)।
কর প্রদানের নিয়ম:
- বিক্রেতা ভ্যাট ও উৎস কর পরিশোধ করবেন, এবং ক্রেতা অন্যান্য কর পরিশোধ করবেন।
সাব–রেজিস্ট্রি অফিস:
- প্রতিটি উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস রয়েছে যেখানে জমি রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
রেজিস্ট্রেশন আইন:
- রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮ এর অধীনে দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
এভাবে সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, যা মালিকানা সুরক্ষা এবং ভবিষ্যতে সুবিধা নিশ্চিত করে।
দলিল রেজিস্ট্রেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা জমির মালিকানা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করে। তাই যথাযথ পদক্ষেপ অনুসরণ করে সঠিকভাবে দলিল রেজিস্ট্রেশন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
দলিল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অসত্য/ভুল তথ্য প্রদান করলে রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পাশাপাশি আইনগত শাস্তির সম্মুখীন হতে হতে পারে। এর জন্য অভিজ্ঞ কোন দলিল লেখকের সাহায্য নেওয়া উচিত।
জমি বাজারের অনেক অভিজ্ঞ দলিল লেখক আছে যারা আপনাকে খুব সহজে ও কম খরচে দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করবে। তাই আর দেরি না করে এখনই একজন দলিল লেখকের পরার্মশ নিতে WhatsApp করুন: 01855558788